জাতীয়

আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ

  প্রতিনিধি ১৬ আগস্ট ২০২৫ , ৬:৪১:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উত্তরের লাখ লাখ মানুষের জীবিকা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার কোটি টাকা, যা ১০ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

প্রথম পাঁচ বছরে প্রকল্পের প্রধান অগ্রাধিকার হবে সেচ ব্যবস্থা উন্নয়ন, নদীর ভাঙন রোধ ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ। ইতোমধ্যেই চীনের দূতাবাসের প্রতিনিধি দল তিস্তার মাঠ পর্যায়ের জরিপ সম্পন্ন করেছে। এছাড়া ইআরডি থেকে খসড়া নথি চীনের কাছে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

উত্তরের দুই কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা মূলত তিস্তা নদীর ওপর নির্ভরশীল। কৃষি ও মৎস্যজীবন এই নদীর ওপর নির্ভরশীল হলেও বছরের পর বছর তিস্তার ভাঙনে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুহারা হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। রিভারাইন পিপলের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর তিস্তার ভাঙন ও প্লাবনে উত্তরের পাঁচ জেলা নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় ১ লাখ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়। এছাড়া ফসলি জমি ও বাস্তুভিটা হারিয়ে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

চীনের ডিরেক্টর অব দ্য পলিটিক্যাল সেকশন জং জিং জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতেই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। সম্প্রতি তার নেতৃত্বে চীনা প্রতিনিধি দল বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ এবং নদীপারের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, ২০১৪ সাল থেকে শুষ্ক মৌসুমে প্রতিবেশী দেশ ভারত তিস্তার পানি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করছে। বর্ষাকালে নদীতে তিন থেকে চার লাখ ঘনফুট পানি প্রবাহিত হলেও কপাট খুলে দেওয়ার কারণে দ্রুত বেগে পানি নেমে আসে, যা উত্তরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তলিয়ে দেয়। ভাঙন ও প্লাবনে ব্যাপক ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। বিগত সরকার তিস্তাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে তিস্তাপারের মানুষের দীর্ঘদিনের আশা বাস্তব রূপ পাবে।

আরও খবর

Sponsered content