প্রতিনিধি ২৫ আগস্ট ২০২৫ , ১২:২৭:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক কক্সবাজার:
সোমবার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারে আয়োজিত রোহিঙ্গা অংশীজন সংলাপে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ও সংকট নিরসনে সাত দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
তার প্রস্তাবের মূল বিষয়গুলো হলো রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের রোডম্যাপ তৈরি, আন্তর্জাতিক দাতাদের ধারাবাহিক সহায়তা, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও আরাকান আর্মির কাছে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও জীবিকা নিশ্চিতে পদক্ষেপ, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা, গণহত্যার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক আদালতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্মভূমির সঙ্গে তাদের নাড়ির টান অটুট। এখন আর শুধু বক্তৃতা দিয়ে সময় কাটানো যাবে না, কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এখনই।
তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ধারাবাহিক সহযোগিতা প্রয়োজন। এজন্য দাতাদের প্রতি তিনি ২০২৫-২৬ সালের যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনার অর্থঘাটতি পূরণের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে আসিয়ান ও প্রতিবেশী দেশগুলোকে রাখাইন অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা, মানবপাচার, মাদক ও ক্ষুদ্র অস্ত্র চোরাচালান বন্ধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস স্মরণ করিয়ে দেন, ২০১৭ সালের আগস্টে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে, যা কক্সবাজারকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে পরিণত করেছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিশ্ব যদি এখনই পদক্ষেপ না নেয়, রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমি থেকে চিরতরে উচ্ছেদ হয়ে যেতে পারে।
রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতির প্রতীক হিসেবে তিনি গত রমজানে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারের ঘটনাও স্মরণ করেন।
কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সংলাপ ‘স্টেকহোল্ডার্স’ ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে এই বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সময় রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস উপলক্ষে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সংলাপে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজুসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, জাতিসংঘ ও রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।