রাজনীতি

এন সি পির জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উদযাপনের দিনেই ভ্রমণ ঘিরে দলের ভেতরেই সৃষ্টি নানা প্রশ্ন ও অস্বস্তি

  প্রতিনিধি ৭ আগস্ট ২০২৫ , ৬:১৩:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর পাঁচ শীর্ষ নেতার কক্সবাজার সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোচনা চলছে। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উদযাপনের দিনেই তাদের ভ্রমণ ঘিরে দলের ভেতরেই সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্ন ও অস্বস্তি।

গত ০৫ আগস্ট, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর প্রথম বর্ষপূর্তিতে এনসিপির পাঁচ শীর্ষ নেতা ঢাকা ছেড়ে কক্সবাজারে অবস্থান করায় বিষয়টি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ঐতিহাসিক দিনে দলের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার ঢাকার বাইরে থাকা এবং সফরের বিষয়ে কোনো পূর্বঘোষণা না থাকায় এনসিপির রাজনৈতিক পর্ষদ থেকে তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত চিঠিতে নেতাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের দুই শীর্ষ নেতার সামনে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। যাদের কাছে এই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে তারা হলেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ (মুখ্য সংগঠক, দক্ষিণাঞ্চল), সারজিস আলম (মুখ্য সংগঠক, উত্তরাঞ্চল), নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী (মুখ্য সমন্বয়ক), ডা. তাসনিম জারা (জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব) ও তাসনিম জারার স্বামী খালেদ সাইফুল্লাহ (যুগ্ম আহ্বায়ক)

এনসিপির পাঁচ নেতা গত ৫ আগস্ট দুপুর ১১টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৪৩৩ ফ্লাইটে কক্সবাজার পৌঁছান। তাদের এই সফরের খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা জল্পনা শুরু হয়। কেউ কেউ দাবি করেন, তারা কক্সবাজারে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করতে গেছেন। এসব গুঞ্জনের জেরে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা ওই হোটেলের সামনে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ করেন। যদিও পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের তথ্যের কোনো সত্যতা মেলেনি।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আরশাদুল হক বলেন, “তারা ঘুরতে যেতে পারেন, এতে কোনো বাধা নেই; কিন্তু মোরাল গ্রাউন্ড দেখলে এটি উচিত হয়নি। জনগণ বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের ব্যাখ্যা শুনেছি, তারা ঘুরতে গেছেন। তার পরও আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চাই, তারা কেন গিয়েছেন। সেজন্যই দলের পক্ষ থেকে শোকজ দেওয়া হয়েছে।”

সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “তারা ঘুরতে যেতেই পারেন; কিন্তু প্রেক্ষাপটটা গুরুত্বপূর্ণ। গণঅভ্যুত্থানের বিশেষ দিন হওয়ায় জনগণের কাছে নেগেটিভ মেসেজ পোঁছেছে। এনসিপিতে কেউ প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। তাই দলের পক্ষ থেকে শীর্ষস্থানীয় এই নেতাদের শোকজ নোটিশ দিয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।”

ঢাকাওয়াচের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, সফররত নেতারা বুধবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে একটি সাদা রঙের ভিআইপি গাড়িতে হোটেল সি পার্ল ত্যাগ করেন এবং কলাতলীর শালিক রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্নভোজ করেন। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইজে অবস্থান নেন। তারা কক্সবাজার থেকে বিমান বা সড়কপথে ফিরবেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গাড়িচালক নুরুল আমিন জানান, তার গাড়িতে হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ সারজিস আলমের স্ত্রী ও সমন্বয়ক তাসনিম জারা হোটেল সি পার্লে যান। তিনি বলেন, তার গাড়িটি আগেই ভাড়া করা ছিল না; বিমান থেকে নেমেই তারা সরাসরি হোটেলে যান।

স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্ট (রয়েল টিউলিপ) এলাকায় ৫ আগস্ট থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছিলেন, যারা বুধবার দুপুরের পর এলাকা ত্যাগ করেন। অন্যদিকে, একটি সূত্র জানিয়েছে, পাঁচ নেতা হয়তো সড়কপথে মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকায়ও যেতে পারেন।

আরও খবর

Sponsered content