প্রতিনিধি ১২ আগস্ট ২০২৫ , ৫:৫৫:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আহমেদীয়া ফাইন্যান্স এন্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদের মালিকানাধীন কাফরুল থানা এলাকায় অবস্থিত “ইউরো স্টার টাওয়ার” নামক দশ তলা বাণিজ্যিক ভবন ক্রোক করেছে সিআইডি। ভবনটির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
অভিযুক্ত মনির আহমেদ (৫৩) ২০০৫ সালে আহমেদীয়া বহুমুখী সমবায় সমিতি নামে ঢাকা জেলা সমবায় সমিতি থেকে নিবন্ধন নেন (নিবন্ধন নং ৬৪৮, তারিখ: ১৭/০৮/২০০৫)। ২০০৬ সালে নাম পরিবর্তন করে আহমেদীয়া ফাইন্যান্স এন্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে পুনঃনিবন্ধন নেন (নিবন্ধন নং ৫৮, তারিখ: ২০/০৭/২০০৬)। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সমিতির মূল উদ্দেশ্য ছিল সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয় ও শেয়ার আমানত সংগ্রহ করে তা থেকে সদস্যদের ঋণ প্রদান এবং তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা। প্রতিষ্ঠার সময় সদস্য সংখ্যা ছিল ২০ জন, যা ২০১৮ সালের অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী তা দাঁড়ায় ২১ জনে। সদস্যদের মাসিক চাঁদা ছিল ২,০০০ টাকা করে। নিয়ম অনুযায়ী সমিতিটি শুধু সদস্যদের মধ্যেই ঋণ ও সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা থাকলেও, অভিযুক্ত মনির আহমেদ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। মিরপুর, ক্যান্টনমেন্ট, বনানী, মহাখালী, কাফরুলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১,০০০–১,১০০ জনের কাছ থেকে অধিক মুনাফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ৫৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ দিয়ে তিনি নিজের নামে বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মনির আহমেদ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদীয়া ফাইন্যান্স এ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ সহ অন্যান্য সহযোগী আসামীদের বিরুদ্ধে ডিএমপি কাফরুল থানার মামলা নং-২৫, তারিখ-১৯/১১/২০২৩ খ্রি., ধারা- মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী-২০১৫) এর ৪(২) (৪) রুজু করা হয়।
তদন্ত চলাকালে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট ইব্রাহিম মৌজায় ৮.৪৭ শতাংশ জমির উপর নির্মিত “ইউরো স্টার টাওয়ার” নামক বাণিজ্যিক ভবনের সন্ধান পায়। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর দায়রা জজ আদালত, ঢাকা ২০২৫ সালের ১৬ জুলাই তারিখে ভবনটি ক্রোকের আদেশ দেন। গ্রাহকের আমানতের অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে দায়ের হওয়া মানিলন্ডারিং মামলাটি বর্তমানে নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে মামলাটির সম্পূর্ণ উদঘাটন নিশ্চিতকল্পে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।