সারাদেশ

নিখোঁজের একদিন পর মুন্সিগঞ্জে মেঘনা নদী থেকে সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ উদ্ধার

  প্রতিনিধি ২২ আগস্ট ২০২৫ , ৬:১৬:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক মুন্সিগঞ্জ:

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদী থেকে প্রবীণ সাংবাদিক, কলাম লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী বিভুরঞ্জন সরকারের (৭১) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিখোঁজের একদিন পর শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে চর বলাকিয়া এলাকায় তাঁর মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন।

নৌ–পুলিশ জানায়, দুপুর ২টার দিকে খবর পাওয়ার পর বিকেল ৩টার দিকে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদনে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাঁর গলায় এখনো চশমা ঝুলছিল। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

পরিবারের অভিযোগ ও পুলিশের বক্তব্য

বৃহস্পতিবার ২১ আগস্ট,সকাল থেকে বিভুরঞ্জন সরকার নিখোঁজ ছিলেন। সেদিন সকালে তিনি কর্মস্থল বনশ্রীর আজকের পত্রিকা কার্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। কিন্তু পরে জানা যায়, তিনি অফিসে যাননি। মোবাইল ফোনটিও বাসায় রেখে বেরিয়েছিলেন। রাত পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় তাঁর ছেলে ঋত সরকার রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তারিকুল ইসলাম বলেন, “বিভুরঞ্জন সরকারের সর্বশেষ অবস্থান নির্ণয় করা যায়নি, কারণ তিনি মোবাইল ফোন সঙ্গে নেননি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আশা করছি, তদন্তে তাঁর গতিপথ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।”

পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম নিশ্চিত করেছেন যে, তাঁর মৃত্যু নিয়ে তদন্ত চলছে। নৌ–পুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, “দেহ দেখে মনে হচ্ছে মৃত্যুর সময় হয়েছে একদিনের মতো। কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই, তবে ময়নাতদন্তেই সঠিক কারণ জানা যাবে।”

সামাজিক প্রতিক্রিয়া

বিভুরঞ্জনের ভাই চিররঞ্জন সরকার বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে লিখেছিলেন, “আমার দাদা সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার সকাল ১০টায় অফিসে যাবেন বলে বের হন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি অফিসে যাননি, পরিচিতজনের কাছেও দেখা মেলেনি। রাত ১টা পর্যন্ত বাসায় ফেরেননি।”

সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার দীর্ঘদিন ধরে কলাম লিখে আসছিলেন। তিনি সমাজ, রাজনীতি ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করতেন। ১৬ আগস্ট থেকে তিনি সাত দিনের ছুটিতে ছিলেন বলে জানা গেছে।

রহস্যে ঘেরা মৃত্যু

প্রবীণ এ সাংবাদিকের মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে—এখনো তা স্পষ্ট নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে সাংবাদিক মহল ও তাঁর শুভানুধ্যায়ীরা ঘটনাটিকে অত্যন্ত রহস্যজনক বলে মনে করছেন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content