প্রতিনিধি ২৫ আগস্ট ২০২৫ , ১২:৩৫:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ সফরকে “অত্যন্ত ফলপ্রসূ”বলে উল্লেখ করেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে তিনি সফর নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
ইসহাক দার জানান, তিনি বাংলাদেশে টানা ৩৬ ঘণ্টার এক ব্যস্ত সূচির সফর শেষ করেছেন। এ সময়ে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনসহ সরকারের একাধিক শীর্ষ নীতিনির্ধারকের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য ও শুল্ক কমিশনের চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার। সফরকালে প্রতিনিধি দল রাজনৈতিক দলসমূহের নেতা, বুদ্ধিজীবী, গবেষক, একাডেমিক, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছে।
এক্সে দেওয়া পোস্টে ইসহাক দার লেখেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠক ছিল অত্যন্ত গঠনমূলক। আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এবং জনগণের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ জোরদার করার বিষয় উঠে আসে।
এর আগে রোববার (২৪ আগস্ট) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। তবে বর্তমান সরকার চায় পাকিস্তানের সঙ্গে অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মতো স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে।
তিনি বলেন, “পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক ও বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। আজকের বৈঠকে আমরা ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছি। পারস্পরিক সম্মান, সমঝোতা ও সহযোগিতার ভিত্তিতেই আমরা সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে চাই।
অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, উভয় দেশ নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে। তিনি বলেন, “আমরা একমত হয়েছি—এসব বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা জরুরি, যাতে সম্পর্কের অগ্রযাত্রায় এগুলো আর বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।
তিনি আরও যোগ করেন, “তিনটি ইস্যুতে আমরা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। এর মধ্যে একটি বিষয়ে দুপক্ষ একমত হয়েছে যে, সেটির সমাধান অবশ্যই করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মসৃণভাবে এগিয়ে নেয়া।
এদিকে বৈঠক শেষে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ১৯৭১ সালের প্রসঙ্গে ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি এবং ২০০২ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পারভেজ মোশাররফের দেওয়া দুঃখপ্রকাশের বিষয় তিনি উল্লেখ করেছেন। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে এ অবস্থানের একমতের প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট করেন, “আমি অবশ্যই একমত নই। একমত হলে তো সমস্যার সমাধান হয়ে যেত তাদের মতো করে। আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়েছি, তারা তাদের অবস্থান জানিয়েছে।