প্রতিনিধি ১৪ আগস্ট ২০২৫ , ৫:০০:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাকিস্তান ও চীনের পাশাপাশি ভারতের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় বাংলাদেশ, এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, নেপাল ও ভুটানের মতো ভারতের সাতটি রাজ্যও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। তবে বিচার ও সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে নির্বাচন হলে দেশ আবারও পুরোনো সমস্যায় ফিরতে পারে।
গত বুধবার (১৩ আগস্ট) সিঙ্গাপুরভিত্তিক সিএনএ টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নেন সাংবাদিক লোকি সু।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশের অবস্থা ছিল যেন রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত একটি এলাকা সবকিছু ধ্বংসপ্রায়। রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা জালিয়াতি ও অপব্যবহারে আক্রান্ত ছিল, যা ফ্যাসিবাদী শাসনের জন্ম দিয়েছিল। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে পুনর্গঠন করাই এখন মূল লক্ষ্য।
ড. ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি প্রধান প্রতিশ্রুতি হলো সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন। তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি আমরা নির্বাচন দিয়েই শুরু করি, তবে সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া থেমে যাবে, আর নির্বাচিতদের হাতে সবকিছু চলে গেলে আমরা আবারও আগের সমস্যায় ফিরে যাব।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “যদি আরও শক্তিশালী কোনো শব্দ থাকত, তাহলে আমি সেটাই ব্যবহার করতাম। কারণ, তিনি সরাসরি রাস্তায় মানুষ হত্যা করেছেন।” শেখ হাসিনার বিষয়ে তিনি যোগ করেন, “বিচারই তার ভাগ্য নির্ধারণ করবে, তাকে অস্থিতিশীলতা তৈরির সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।”
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা কখনও বলিনি যে ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই না। পাকিস্তান, চীনও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চায়। নেপাল ও ভুটানকে যেমন অর্থনৈতিক অঞ্চলে আনার কথা বলেছি, তেমনি ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যও যুক্ত হতে পারে। বঙ্গোপসাগরের সুবিধা আমরা একসঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারি।”
দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানান, শুরুতে তিনি এ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অনুরোধ, দেশের ত্যাগ ও রক্তপাতের কথা শুনে শেষ পর্যন্ত রাজি হন। “তারা বলেছিল, আপনি দেশ থেকে দূরে সুখে আছেন, অথচ আমাদের এই মুহূর্তে আপনার প্রয়োজন। এই কথাই আমাকে নড়ে দিয়েছে,” বলেন তিনি।