জাতীয়

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তার

  প্রতিনিধি ২৪ জুলাই ২০২৫ , ৬:১৭:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তীব্র সমালোচিত সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তা করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ৮টার কিছু পর এই গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “সকাল আটটার কিছু পর ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে আমরা আটক করেছি। তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়সজনিত কারণে অবসরে যান।

সম্প্রতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি তুলে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তারা অভিযোগ করে, “দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর” হিসেবে খায়রুল হককে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

বিচারপতি খায়রুল হকের কিছু রায় নিয়ে বিচার অঙ্গনে বিস্তর বিতর্ক রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তিনি বিভিন্ন সুবিধা পেয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল একাধিক সিনিয়র বিচারপতিকে উপেক্ষা করে।

তার বিরুদ্ধে ত্রাণ তহবিলের অর্থ ব্যবহার করে চিকিৎসা করানো থেকে শুরু করে বিতর্কিত রায়, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেওয়া তার রায়টি দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার নতুন অধ্যায় শুরু করে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। ওই রায়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের এককভাবে ক্ষমতা দখলের পথ সুগম হয়।

এছাড়া তিনি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অস্বীকার করে আদালতের রায় দেন, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ এবং বিতর্কিত বিচারপতিদের শপথ পড়ানোসহ একাধিক অভিযোগের মুখে পড়েন।

শেখ হাসিনা সরকারের শেষ সময়ে খায়রুল হক আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র ও জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর, ১৩ আগস্ট তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে তিনি আড়ালে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি মামলা করা হয় গত ১৮ আগস্ট, যেখানে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।

আরও খবর

Sponsered content