ড. ইউনূস বলেন, “স্বাস্থ্য খাতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু নিয়ে আমরা সবাই আজ একত্রিত হয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ বলছি এ কারণে যে, জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে দক্ষ ও কর্মক্ষম মানবসম্পদ দরকার। দক্ষ ও কর্মক্ষম মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে না পারলে ব্যক্তিগত জীবন থেকে জাতীয় উন্নয়ন—কোনোটিই যথাযথভাবে করা যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও ভৌগোলিক প্রেক্ষাপট এবং অল্প এলাকায় বিপুল জনগণের বসবাসের কারণে এই পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে উঠেছে। ফলে এটি শুধু স্বাস্থ্যখাত নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি, সামাজিক নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশই ঘটে অসংক্রামক রোগের কারণে এবং এর মধ্যে ৫১ শতাংশ মৃত্যু ঘটে ৭০ বছরের নিচে বয়সে, যাকে অকাল মৃত্যু হিসেবে ধরা হয়। তিনি বলেন, “আমাদের ব্যক্তিগত চিকিৎসা ব্যয় (আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার) ৬৯ শতাংশ, যার বেশির ভাগ অসংক্রামক রোগের জন্য ব্যয় হয়।”
ড. ইউনূস বলেন, কেউ যদি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তার পরিবারকে আর্থিকভাবে চরম চাপ নিতে হয় এবং প্রায়ই সহায়হীন অবস্থায় পড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর বিদেশে গিয়ে ব্যয়বহুল চিকিৎসা নিতে হয়, যার ফলে দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যায়।
তিনি বলেন, “অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা যেমন উন্নত হওয়া জরুরি, তেমনি রোগগুলো যেন কম হয় অথবা না হয়, সেজন্য উপযুক্ত জনসচেতনতা এবং প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করে তোলা দরকার।” এ কাজ শুধু স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পক্ষে সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এজন্য সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন।
খাদ্য, কৃষি, শিক্ষা, ক্রীড়া, স্থানীয় সরকার, গণপূর্তসহ প্রতিটি খাতের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। প্রতিটি খাতের জন্য নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও নিবিড় উদ্যোগ প্রয়োজন। এসব মন্ত্রণালয়কে চিহ্নিত করে তাদের করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
“তবুও আমি ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়নে কয়েকটি বিষয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করতে চাই,”—বলেন প্রধান উপদেষ্টা।