রাজধানী

পুলিশের বাধার কারণে জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন স্থগিত হয়েছে

  প্রতিনিধি ২২ আগস্ট ২০২৫ , ৪:২১:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ

আ জা ডেক্স:

ঢাকার খামারবাড়িতে শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন’ শেষ মুহূর্তে পুলিশের বাধার কারণে স্থগিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আয়োজকরা। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ আয়োজন হওয়ার কথা থাকলেও অনুমতি না মেলায় তা আর সম্ভব হয়নি।

এভাবে আমাদের কর্মসূচি থামানো যাবে না, সম্মেলনের পরবর্তী তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে, বলেন সুব্রত বল্লভ।

পুলিশের ভাষ্য, মহানগর এলাকায় এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের জন্য পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে পূর্বানুমতি নিতে হয়। আয়োজকরা সময়মতো অনুমতি না নেওয়ায় তাদেরকে অনুষ্ঠান করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

আয়োজকরা জানিয়েছেন,২১ আগস্ট বৃহস্পতিবারই তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে অনুমতির জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে পুলিশ জানায়, “বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা” এবং স্বল্প সময়ে নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ সম্ভব না হওয়ায় অনুমতি দেওয়া যায়নি।

আজ শুক্রবার ২২ আগস্ট সকাল ১০টায় ‘সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের’ ব্যানারে ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন ২০২৫: পাহাড় থেকে সমতল, অস্তিত্ব রক্ষায় অটল’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। আয়োজকদের দাবি, তারা প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি শেষ করেছিলেন। কিন্তু ভেতরে প্রবেশের আগে পুলিশ বাধা দিলে উপস্থিত প্রতিনিধিরা খামারবাড়ি সড়কের পাশে কিছুক্ষণ অবস্থান করে ফিরে যান।

সংগঠনটির ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে প্রশ্ন তোলা হয়, একটা ইনডোর প্রোগ্রাম! শেষ মুহূর্তে নিরাপত্তা বাহিনী থেকে বাঁধা…বাংলাদেশে তো যা সংখ্যালঘু হামলা হয়, সবটাই রাজনৈতিক।।। তাহলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্মেলন কে এতো ভয় পাওয়ার কি আছে?

আয়োজকদের পক্ষে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি সুব্রত বল্লভ বলেন, আমরা সবকিছু রেডি করেছিলাম। গতকাল দরখাস্ত জমা দিয়েছি, আজ সকালেও খোঁজ নিয়েছি, কিন্তু কোনো উত্তর পাইনি। সকাল ১০টায় প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আমাদেরকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। যারা ঢুকেছিল, তাদের বের করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, সারা দেশ থেকে প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দিতে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। পরে আয়োজকদের কয়েকজন ব্যানার নিয়ে বাইরে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করলে সেখানেও পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত দুপুর ২টা পর্যন্ত সড়কের পাশে অবস্থান করে তারা ফিরে যান। সুব্রত বল্লভ আরও বলেন, এভাবে আমাদের কর্মসূচি থামানো যাবে না। সম্মেলনের নতুন তারিখ জানিয়ে আবার আয়োজন করা হবে।

অন্যদিকে তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেন জানান, প্রোগ্রামে বিশৃঙ্খলা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এছাড়া এ ধরনের আয়োজন করতে কমিশনার মহোদয়ের অনুমতি প্রয়োজন। তারা মাত্র একদিন আগে আবেদন করেছে, অথচ এসব আয়োজনের অনুমতি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগে।

তিনি আরও বলেন, আয়োজকরা হলরুম ভাড়ার বৈধ কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি। তাদেরকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে, যেন ভবিষ্যতে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে আবেদন করে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে তবেই অনুমতি দেওয়া সম্ভব।

তবে আয়োজকদের দাবি, ভাড়া বাবদ আংশিক অর্থ ইতিমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছিল। সুব্রত বল্লভ জানান, আমরা সব ডকুমেন্টস জমা দিয়েছি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, প্রশাসনের অনুমতি পেলে ভাড়ার কাগজপত্র দেওয়া হবে।

সংগঠনটির ফেসবুক পেইজে বৃহস্পতিবার সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিওতেও দেখা যায়, আয়োজকরা সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। সেখানে জানানো হয়, সংখ্যালঘুদের ওপর গত ৫৪ বছরের হামলার প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও আট দফা দাবির প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন। বিশেষ করে চট্টগ্রামের ইসকন মন্দির পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রক্ষচারীর নেতৃত্বে আট দফা দাবিতে আন্দোলন জোরদার হয়। পরে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। তার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভও হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content