প্রতিনিধি ২৬ আগস্ট ২০২৫ , ৫:৪২:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিন ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা সিদ্ধান্ত প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি করেছে। অনেকেই বলছেন, এমন সিদ্ধান্ত সামরিক শাসনেও দেখা যায়নি।
প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাউকে কোনো আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে দেয়নি। “আমাদের কারো সাথে কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা অভ্যন্তরীণ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী কেন মোতায়েন করা হবে, সেটাও আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটা প্রচণ্ড রকমের লজ্জাজনক একটা ব্যাপার,” বলেছেন ডাকসু নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী উমামা ফাতেমা।
অন্য প্রার্থী সাদিক কায়েমও একই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচন নিয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করা। কিন্তু কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই এগুলো দেওয়া হচ্ছে।
ডাকসু’র সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্নাও বিষয়টি নিয়ে হতবাক। তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্পর্শকাতর জায়গায়, যেখানে সেনাদের সঙ্গে ছাত্র সংঘর্ষের নজির রয়েছে, সেখানে এমন সিদ্ধান্ত কীভাবে নেওয়া হলো? তখনকার সামরিক সরকারের সময়ও আমরা এরকম সিদ্ধান্ত দেখিনি। এমনকি পুলিশকেও ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়া হতো না।
উল্লেখ্য, সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভোটার বা প্রার্থীদের মতামত নেওয়া হয়নি, যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে। তবে তারা দাবি করেছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “ছাত্র-ছাত্রী এবং অংশীজনদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে আলাপের পর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা চাইলে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা সম্ভব।
ঢাবি প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, নির্বাচনের আট ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রথম স্তর: বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্য ও প্রক্টরিয়াল টিম।
দ্বিতীয় স্তর: পুলিশ বাহিনী।
তৃতীয় স্তর: সাতটি প্রবেশমুখে সেনাবাহিনী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে অবস্থান করবে।
প্রয়োজন অনুযায়ী সেনা ভোট শেষে ফলাফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র কর্ডন করবে। এছাড়া নির্বাচনের সময় আবাসিক হলগুলোতে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে এবং ভোটারদের জন্য অতিরিক্ত বাস ট্রিপ দেয়া হবে।
তবে প্রার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন ভোটার ও প্রার্থীদের সঙ্গে আলাপ ছাড়াই সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, “আলোচনা ও সবার মতামত না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তের আমরা নিন্দা জানাই। দাবি করি যেন এটি দ্রুত প্রত্যাহার করা হয়।